সুইজারল্যান্ডে ২০২৫ সাল থেকে মুখ ঢেকে রাখার নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে
- By Jamini Roy --
- 09 November, 2024
সুইজারল্যান্ডে আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে মুখ ঢেকে রাখার ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে, এমন ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। এর ফলে, কেউ যদি জনসমক্ষে মুখ ঢাকা অবস্থায় বের হন, তবে তাদের ১ হাজার ১৫০ ডলার জরিমানা গুনতে হবে। এই নতুন আইনটি প্রবর্তনের জন্য ২০২১ সালে সুইজারল্যান্ডে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দেশের জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ মুখ ঢেকে রাখার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে রায় দেন। এর পর, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই আইন কার্যকর হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
এই নিষেধাজ্ঞা মূলত বোরকা ও নিকাব পরা নারীদের লক্ষ্য করে প্রণীত হয়েছে। দেশটির ফেডারেল কাউন্সিল এক ঘোষণায় জানিয়েছে, এই আইন কার্যকর হলে, যারা এই নিয়ম ভাঙবেন, তাদেরকে ১ হাজার ১৪৪ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা) জরিমানা করা হবে। তবে বিমানবন্দর, কূটনৈতিক এবং কনস্যুলার এলাকায় এই আইন কার্যকর হবে না, সেই সঙ্গে ধর্মীয় ও পবিত্র স্থানগুলিতে মুখ ঢাকা রাখা যাবে।
সুইজারল্যান্ড সরকার আরও জানিয়েছে, স্বাস্থ্যজনিত, আবহাওয়াজনিত বা ঐতিহ্যগত কারণে মুখ ঢাকার সুযোগও থাকবে। বিশেষত, বিনোদনমূলক কার্যক্রম, বিজ্ঞাপন এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষার প্রয়োজনে মুখ ঢেকে রাখা যাবে, তবে এর জন্য আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন হবে।
এদিকে, এই আইনটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। মুসলিম সংগঠনগুলোর মতে, এই আইন তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং পোশাকের অধিকারকে সীমাবদ্ধ করছে। তারা দাবি করেছে যে, বোরকা পরা নারীরা তাদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অংশ হিসেবে এটি পরিধান করেন, এবং এটি তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। তারা আরও মনে করেন, এ আইনটি মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর আঘাত হানছে।
এই আইনটি মূলত সেই একই গোষ্ঠীর উদ্যোগে প্রবর্তিত, যারা ২০০৯ সালে সুইজারল্যান্ডে নতুন মিনার নির্মাণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন। সেই সময়ের মতো এই আইনও মুসলিমদের জন্য একটি প্রতীকী আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তবে সুইজারল্যান্ড সরকার তাদের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করেছে যে, এই আইনটি দেশের সামাজিক ঐক্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নেয়া হয়েছে, এবং এটি কোনওভাবেই ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক সহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে নয়।